যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে চলছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর। দুয়েকটা ত্রুটি ও সমালোচনা বাদে বেশ নির্বিঘ্নভাবেই শেষ হয়েছে গ্রুপ পর্বের খেলা। তবে এরই মাঝে বিশ্বকাপে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে কেনিয়ার সাবেক এক ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে। যদিও আইসিসির তৎপরতায় অনাকাঙ্ক্ষিত ওই ঘটনার জল বেশি দূর গড়ায়নি বলে জানিয়েছে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে একই সংবাদ দিয়েছে ভারতের প্রায় সব সংবাদমাধ্যম। সংবাদ সংস্থাটির পাওয়া তথ্যমতে– গায়ানায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের একটি ম্যাচে এমন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা চলেছে। ভিন্ন ভিন্ন ফোন নম্বর থেকে কেনিয়ার সাবেক এক বোলার যোগাযোগের চেষ্টা করেন উগান্ডার এক ক্রিকেটারের সঙ্গে। যা তাৎক্ষণিকভাবেই উগান্ডার পক্ষ থেকে আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী বিভাগকে অবহিত করলে তারা পদক্ষেপ নেয়।
বলে রাখা ভালো, ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব এলে আইসিসিকে না জানানোও অপরাধের শামিল বলে ধরা হয়। এমন ঘটনায় এর আগে বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার নিষিদ্ধও হয়েছিলেন, সেই তালিকায় আছে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানের নাম–ও। সাবেক এই টাইগার অধিনায়ক ম্যাচ গড়াপেটার ফাঁদে পা না দিলেও, আইসিসিকে না জানানোয় দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। যদিও পরে সেটি নেমে আসে এক বছরে।
এদিকে, পিটিআইকে একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘উগান্ডার ক্রিকেটারকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য লক্ষ্য বানানো হয়েছে, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। সাধারণত সহযোগী দেশগুলোই পরাশক্তিদের তুলনায় এক্ষেত্রে সহজ লক্ষ্য। কিন্তু এটা ভালো বিষয় যে, তারা দ্রুত আইসিসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ফলে তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নেওয়া গেছে।’ তবে কোন ক্রিকেটারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ও অভিযুক্তের নাম প্রকাশ করেনি আইসিসি।
আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ‘ক্রিকেটারদের সব সময়ই এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হয়, বিশেষত ছোট দলগুলোই বেশি শিকার হয় এই ঘটনায়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো বড় ইভেন্টে এ চেষ্টা আরও বেশি হয়ে থাকে, সে কারণে এরকম কোনো ইঙ্গিত পেলেই জানাতে হয় আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে (আকু)। তারপর তারা যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে তদন্ত ও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’ একইভাবে কেউ যদি ওই ঘটনায় জড়িত না সত্ত্বেও আইসিসিকে না জানায়, তথ্য গোপনের অপরাধে তাকেও শাস্তি পেতে হবে।
এবার ইতিহাস তৈরি করে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে এসেছিল উগান্ডা। আফ্রিকান অঞ্চলের বাছাইপর্বে তারা জিম্বাবুয়ের মতো দেশকে বিদায় করে দিয়ে তারা পা রাখে বিশ্বকাপে। এরপর প্রথমবারের ম্যাচ জয়ের ইতিহাসও গড়ে উগান্ডা, গ্রুপপর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে তারা ৩ উইকেটে হারায়। যদিও বাকি তিনটি ম্যাচই হেরেছে। এমনকি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডও সঙ্গী হয়েছে তাদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৯ এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তারা অলআউট হয় মাত্র ৪০ রানে। দুটিই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড।
উল্লেখ্য, আজই (মঙ্গলবার) শেষ হলো চলতি বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব। আগামীকাল (বুধবার) থেকে শুরু হবে সুপার এইটের খেলা। যেখানে এক নম্বর গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও আফগানিস্তান। এ ছাড়া দুই নম্বর গ্রুপে অবস্থান দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের।