সরকার পতনের পরেই যেন পালটে গিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সামগ্রিক এক চিত্র। বোর্ডের দায়িত্বে থাকা একাধিক পরিচালক এবং কর্তাব্যক্তিরাই ছিলেন সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ। শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পরই আত্মগোপনে আছেন তারা। সেই সুবাদেই উঠে আসছে বিসিবির গত দেড় দশকের অন্যায়-অনিয়মের অভিযোগ।
দীর্ঘ সময় নীরব থাকলেও এবারে ক্রিকেট বোর্ডের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন জাতীয় দলের সাবেক-বর্তমান থেকে শুরু করে ক্রীড়া সংগঠকরাও। বিসিবি যেন এখন সমালোচনার তিরে পুরোপুরি বিদ্ধ। এরইমাঝে গতকাল উঠেছে নতুন অভিযোগ। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ভারতে হওয়া বিশ্বকাপের টাকাই এখন পর্যন্ত বুঝে পায়নি বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা।
কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল গতকাল রোববার মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দেবব্রত বলেন, ‘ক্রিকেট অপারেশন্স এখন যেটা আছে ক্রিকেটারদের। আপনারা কি জানেন ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ হয়েছিল ভারতে। সেই ওয়ানডে বিশ্বকাপের টাকা আইসিসির সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের যে চুক্তি থাকে ৫০ দিনের মধ্যে টাকা দেওয়ার কথা। এটা খেলোয়াড়দের মধ্যে বণ্টন হয় সেই টাকা এখনো পর্যন্ত খেলোয়াড়দের দেওয়া হয়নি।’
এদিকে এই প্রসঙ্গে বিসিবি দিয়েছে ভিন্ন এক জবাব। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এক সূত্র ঢাকা পোস্টকে জানায় এখন পর্যন্ত আইসিসির পক্ষ থেকেই এই অর্থ বাংলাদেশের কাছে পাঠানো হয়নি।
বোর্ডের সেই সূত্রের ভাষ্য, ‘আইসিসির টাকা এখনো পাঠায়নি। টাকা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে পাঠায়। শ্রীলঙ্কা গত মাসে পেয়েছে। ট্যাক্স ডিডাকশন, কিছু ফাইন্যান্সিয়াল কমপ্লায়েন্স আছে। প্রাইজমানি পেতে ওখানে ভারতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্ম পর্যন্ত নিয়োগ দিতে হয়েছে।’
বিসিবির সেই সূত্র অবশ্য শ্রীলঙ্কা কেন আগে টাকা পেয়েছে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছে, ‘আর্থিক লেনদেনের প্রক্রিয়া একেক দেশে একেকরকম। যাদের সঙ্গে প্রক্রিয়াটা সহজ সেসব সদস্য দেশ আগে টাকা পেয়েছে। যাদের একটু জটিল, তাদের এই প্রক্রিয়া মেনে পেতে হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, ২০২৩ বিশ্বকাপের মূল পর্বে অংশগ্রহণের জন্য ১ লাখ মার্কিন ডলার প্রাইজমানি পেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। দুই ম্যাচ জেতায় ৪০ হাজার করে আরও ৮০ হাজার মার্কিন ডলার বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার পাবেন সাকিব-শান্তরা, বাংলাদেশি মুদ্রায় যেটি প্রায় ২ কোটি টাকা।