কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশজুড়ে চলমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তারকাদের মাঝেও বিভেদ দেখা গেছে। একপক্ষ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে কথা বলছে, অপরপক্ষ সহিংসতায় ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এরই মধ্যে গত ১ আগস্ট রাজধানীর ফার্মগেটে সমাবেশ করেছেন দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীরা। যেখানে নাট্যঙ্গন থেকে শুরু করে সিনেমাঙ্গনের তারকারাও উপস্থিত ছিলেন। ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যার’ প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশ থেকে হত্যার বিচার চেয়েছেন তারা।
একইদিনে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) পরিদর্শন করেছেন চলচ্চিত্র, নাটক ও সংগীতাঙ্গনের শিল্পী-পরিচালকেরা। এ সময় বিটিভিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন শিল্পীরা।
যেখানে ছিলেন সংসদ সদস্য ও অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ, শমী কায়সার, রোকেয়া প্রাচী, জ্যোতিকা জ্যোতি, সোহানা সাবাসহ আরও অনেকে।
বিটিভি প্রাঙ্গনে গিয়ে তাদের কান্নার দৃশ্য ভালোভাবে নেননি তরুণ প্রজন্মের অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে রোকেয়া প্রাচী, ফেরদৌসদের ঘৃণা প্রকাশ করেছেন তিনি।
শুক্রবার নিজের ফেসবুক আইডি এবং পেজে একটি কার্ড শেয়ার করে সে শিল্পীদের সমালোচনা করেন সাদিয়া আয়মান। বিটিভি ভবন পরিদর্শনে গিয়ে অভিনেত্রী শমী কায়সার বলেছিলেন, ‘বিটিভি প্রাঙ্গণে এসে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি।’ কার্ডটি শেয়ার করে সাদিয়া লিখেছিলেন, ‘শেম অন ইউ গাইজ।’
নিজের সে মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে শুক্রবার রাত ৯টার কিছু সময় পর দেওয়া এক পোস্টে সাদিয়া আয়মান লিখেছেন, ‘একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা অভিনেত্রীরা বিটিভির প্রাঙ্গণে গিয়ে চোখের পানি ঝরিয়েছেন। অবশ্যই তাদের জীবন ও ক্যারিয়ারের সঙ্গে বিটিভি কেন্দ্রিক স্মৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাদের দুঃখ পাওয়াটা হয়তো স্বাভাবিক। কিন্তু! এত ছাত্র-ছাত্রী, শিশু, মা, বোন, সাধারণ মানুষ যে মারা গেল তা নিয়ে একবারও কিচ্ছু বললেন না! একবারো দুঃখ প্রকাশ করলেন না। একবারো এই মানুষগুলোর হত্যার বিচার চেয়ে কিছু বললেন না। কেন?’
ক্ষোভ জানিয়ে সে পোস্টে সাদিয়া আরও লিখেছেন, ‘কারণ যারা এই আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন তারা আপনাদের কেউ না। তাদের বা তাদের পরিবারের দ্বারা আপনাদের কোনো লাভ হবে না, স্বার্থ হাসিল হবে না এবং ক্ষমতাও পাবেন না। তাই কি? নিজেদের লাভ লস চিন্তা করে, ক্ষমতার স্বার্থে কিংবা কাউকে দেখানোর জন্য আপনারা যে কথাগুলো ক্যামেরার সামনে বলেছেন এগুলো সারাজীবন আর্কাইভে তো থাকবেই, আমাদের মনেও থেকে যাবে। জেনারেশন টু জেনারেশন জানবে ৯০ দশকের যাদের অভিনয় টিভি স্ক্রিনে দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি এখন তাদের বাস্তব জীবনের কর্ম দেখে আমরা বিস্মিত এবং লজ্জিত! দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আপনাদের প্রতি শ্রদ্ধা হয়তো আর কখনো ফিরে আসবে না।’