আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আপনাদের (বিএনপি) নৃশংসতা হানাদার বাহিনীকে হার মানিয়েছে। ক্ষমতার জন্য লন্ডনে পলাতক… গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কার স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি দখল করার টার্গেটও ছিল সেই রাতে। যদি কারফিউ জারি না হতো, এই প্ল্যান তাদের ছিল।
রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে ঢাকা জেলা কার্যালয়ে দলটির জেলা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, আপনাদের (বিএনপি) নৃশংসতা হানাদার বাহিনীকে হার মানিয়েছে। ক্ষমতার জন্য লন্ডনে পলাতক… গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কার স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি দখল করার টার্গেটও ছিল সেই রাতে। যদি কারফিউ জারি না হতো, এই প্ল্যান তাদের ছিল। শ্রীলঙ্কার ঘটনার মতো প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি আক্রমণ করা, অভ্যুত্থানের ওপর ভর করে হাওয়া ভবনের যুবরাজ ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিল। এটাই তো ছিল তাদের পরিকল্পনা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন স্বাধীনতা বিরোধী, দেশ বিরোধী, উন্নয়ন বিরোধী অপশক্তিকে নিয়ে নতুন প্লাটফর্ম করার কথা জানান দিচ্ছে। তাদের আহ্বানে তাদের দোসররা সাড়া দেবে এটাই স্বাভাবিক। মাথা যেদিকে যাবে লেজও সেদিক অনুসরণ করবে, এতে নতুনত্ব কিছু নেই। তাদের আগুন সন্ত্রাসের ঐক্য দেশ ও দেশের উন্নয়ন ধ্বংসের ঐক্য।
আজ গণভবনে প্রধানমন্ত্রী সহিংসতায় নিহত আহতদের পরিবার, পরিজনের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদেরকে কীভাবে সাহায্য করা যায়, তাৎক্ষণিক সাহায্য করছেন এবং ভবিষ্যতে যেনো সচ্ছলভাবে চলতে পারেন সে ব্যবস্থা করছেন। এই কাজ তো বিএনপি করে না। ফখরুল পারে শুধু হঠাৎ করে অন্ধকারে ঢিল ছুড়তে। তারা আছে বিবৃতির রাজনীতি নিয়ে, তারা মানুষের কাছে যায় না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমি ফখরুল সাহেবকে বলতে চাই, নিজ দলের লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীরা যখন জামায়াতের দোসরদের সঙ্গে নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা করে, দেশের সম্পদ ধ্বংস করে, কর্তব্যরত পুলিশ বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করে, এটা কি মানবিক? মধ্যযুগের নির্মমতাকে হার মানিয়ে যখন আগুন সন্ত্রাসীরা লাশের ওপরও নির্যাতন চালায় একাত্তরের সেই বর্বরতা আবারও দেখাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। একাত্তরের প্রেতাত্মা এরা, হানাদারদের প্রেতাত্মা এরা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাস র্যাপিড ট্রানজিট গাজীপুর থেকে চালু হওয়ার কথা, ৩৪টা এক্সেলেটর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্যামনে চালু করব? এগুলা তো মানুষের জন্য করা হয়েছে, জনগণের জন্য করা হয়েছে। জনগণ আজ উপলব্ধি করছে, মেট্রোরেল, এলিভেটেড চালু না থাকলে তারা কতটা কষ্টে থাকে। এই কষ্টটা আমরা দেইনি। দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। ক্ষমতার জন্য সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।
তিনি বলেন, বিদেশ থেকে অনেক সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অরগানাইজ করছেন আমরা জানি, তাদেরকে বলব কারো প্ররোচনায় বিবৃতি না দিয়ে এখানে এসে মেট্রোরেলের, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের, বিআরটিএর ধ্বংসলীলা দেখুন। বিআরটিসির ৪৪টি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। সে দৃশ্যপট দেখুন।
তিনি আরও বলেন, আজকে যেভাবে আক্রমণ হচ্ছে, বিবৃতি চলছে, বিবৃতি যুদ্ধ চলছে দেশে-বিদেশে। যেখানে আজ ওয়ান ইলেভেনের মতো কুশীলব ড. ইউনূসও যোগ দিয়েছেন।
আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই আমরা আক্রান্ত, আক্রমণকারী নই। বিবৃতি আসছে আক্রান্তদের বিরুদ্ধে। আমরা আক্রমণকারী নই। আমাদের মেট্রো, বিআরটিএ, পদ্মা সেতুতেও কয়েকবার আগুন লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে, বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, এই কারফিউ দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সিদ্ধান্ত যখন দিলেন, সেনাবাহিনী নামলো, আজ কতদিন? আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি একটা গুলিও ছোড়া হয়নি। অথচ অপবাদ দেওয়া হচ্ছে আমরা হাজার হাজার মানুষ মেরে ফেলেছি।
তিনি আরো বলেন, এখন অনেকে অনেক কথা বলেন, ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে ১৫ জনকে। এসবের জন্য কারা দায়ী? শেখ হাসিনা যাচ্ছেন বিবেকের টানে, হৃদয়ের টানে, আপনাদের মতো মায়া কান্না করার জন্য নয়। বিবেক আর হৃদয়ের টানে তিনি হাসপাতালে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু মানুষের জন্য যা করতেন তার কন্যাও সে সহানুভূতি নিয়ে যাচ্ছেন।