যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে ফল ঘোষণা চলছে। ইতোমধ্যেই এই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিশ্চিত করেছে বিরোধী লেবার পার্টি। অন্যদিকে নির্বাচনে ভরাডু্বি হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দল কনজারভেটিভ পার্টির।
যদিও নির্বাচনে কনজারভেটিভদের ‘ঐতিহাসিক পরাজয়’ হতে চলেছে বলে আগেই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল বুথ ফেরত সমীক্ষায়। সবকিছু ঠিক থাকলে ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন বামপন্থি লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার।
শুক্রবার (৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিরোধী দল লেবার পার্টি ৩৬২ আসনে জয়ী হয়েছে। আর কনজারভেটিভ পার্টি ৮৩টি আসনে জয় পেয়েছে। আর লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি জয় পেয়েছে ৫১টি আসনে।
সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ অন্তত ৩২৬টি আসনে জয় পেতে হবে। লেবার পার্টি ইতোমধ্যেই সেই ম্যাজিক ফিগার পার করেছে। আশা করা হচ্ছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যাওয়া লেবার পার্টি ৪১০টি আসনে জয় পাবে। আর কনজারভেটিভ পার্টি জয় পেতে পারে ১৩১ আসনে।
অবশ্য ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির পূর্বাভাস মতে, লেবার পার্টি ৪১০টি আসনে জয় পেতে যাচ্ছে, আর কনজারভেটিভ পার্টি পাবে ১৪৪টি আসন।
এদিকে ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টির ভূমিধস জয়ের অর্থ হচ্ছে স্যার কিয়ার স্টারমার দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। নিজের আসনে জয়ের পর স্টারমার বলেছেন, ‘পরিবর্তনের সূচনা হলো এখান থেকেই.. এটা আমাদের জন্য দেওয়ার সময়’।
এছাড়া লেবার পার্টির সাবেক নেতা জেরেমি করবিনও নিজের আসনে জয় পেয়েছেন। তবে জর্জ গ্যালাওয়ে নিজের আসনে হেরে গেছেন। রিফর্ম ইউকে দলের নেতা নাইজেল ফারাজ প্রথম বারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে ২০১০ সালের পর আবারও ডাউনিং স্ট্রীটে একজন লেবার প্রধানমন্ত্রী আসতে চলেছেন। অন্যদিকে কনজারভেটিভদের মধ্যে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে লড়াই হবে কারণ ঋষি সুনাক নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে মনে হচ্ছে।
কনজারভেটিভ অর্থাৎ টোরিরা লিবারেল ডেমোক্র্যাট ও নাইজেল ফারাজের রিফর্ম ইউকে পার্টির দিক থেকেও চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। কারণ এই দল দুটি আগের চেয়ে বেশী আসন পাচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, জনমত সমীক্ষায় অনেক পিছিয়ে থাকা সত্ত্বেও গত মে মাসে, প্রয়োজনের থেকে অনেক আগে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন ঋষি সুনাক। যা তার প্রতিপক্ষকে তো বটেই, নিজের দলকেও চমকে দিয়েছিল। তিনি আশা করেছিলেন, এর মধ্যে লেবারদের সঙ্গে ব্যবধান তিনি কমিয়ে ফেলবেন।
কিন্তু নির্বাচনে তার প্রচার সেভাবে সাড়া ফেলতে পারেনি। লেবার নেতা কিয়ার স্টারমারকে ক্ষমতায় আনার জন্য যে জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ রয়েছে, তা নয়। তবে, তিনি যে পরিবর্তনের সহজ-সরল বার্তা দিয়েছেন, তা ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।