পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রায় ইউরেনিয়ামসমৃদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে ইরান। সোমবার জাতিসংঘের পারমাণবিক শক্তি নজরদারি সংস্থা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এক গোপন প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এপি, ভিওএ, রয়টার্সের।
আইএইএ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের কাছে যে পরিমাণ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে, তা ২০১৫ সালে তেহরান ও বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে উপনীত চুক্তিতে বেঁধে দেওয়া পরিমাণের চেয়ে অন্তত ৩০ গুণ বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের কাছে থাকা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুতের পরিমাণ ৬,২১৩.৩ কিলোগ্রামের (১৩,৬৭১.৫ পাউন্ড) বেশি। ফেব্র“য়ারিতে আইএইএ-এর শেষ প্রতিবেদন দেওয়ার পর ইরান এর পরিমাণ ৬৭৫.৮ কিলোগ্রাম (১,৪৮৯.৮ পাউন্ড) বৃদ্ধি করেছে।
আইএইএ-এর পরিচালক এবং জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি গত মাসে বলেছিলেন, ইরানের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। এ ইউরেনিয়াম দিয়ে ইরান ইচ্ছা করলে বেশ কয়েকটি পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারে। স্কাই নিউজকে তিনি এপ্রিলে বলেন, যে পর্যায়ের পরিদর্শন আমাদের প্রয়োজন, সেই পর্যায়ের পর্যবেক্ষণ ইরানে করা যাচ্ছে না।
ইরানের কর্মকর্তারাও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তারা প্রয়োজনে পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারেন। তবে ইরান বরাবরই বলে আসছে তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি পরিদর্শনের পরিধি বাড়ানোর ব্যাপারে ২০২৩ সালে জাতিসংঘ ও ইরানের মধ্যকার চুক্তির ব্যাপারে দুপক্ষ এখনো কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।
সোমবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএইএ-এর কর্মকর্তাদের পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শন প্রতিহত করার ব্যাপারে তেহরান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, সেটা এখনো ইরান পুনর্বিবেচনা করেনি। দুই পক্ষের চলমান আলোচনার মাধ্যমে ইরান সেটা পুনর্বিবেচনা করবে বলে আইএইএ আশা করছে।
আইএইএ প্রধান সম্পর্ক উন্নয়নে এ মাসে ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুর পর সেই আলোচনাও স্থবির হয়ে গেছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোকে নিয়ে তেহরানের পরমাণু আলোচনা থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে ইরানের সঙ্গে আইএইএ-এর টানাপোড়েন শুরু হয়।