এম চিন্নাস্বামীতে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়েছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ব্যাটাররা। আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৭৭ রান পেরিয়েও গেলেন তারা। চিন্নাস্বামীতে স্বাগতিক বেঙ্গালুরুর সমর্থকরাও দাঁড়িয়ে করতালি দিতে বাধ্য হলেন। আধুনিক যুগের টি-টোয়েন্টি থেকে হয়ত এটাই প্রত্যাশা করেন দর্শকরা। রান হবে। চার-ছয়ের বন্যা বইবে। ক্রিকেটের বিজ্ঞাপন বোধকরি এমনই।
সোমবার রাতে চিন্নাস্বামীতে হায়দরাবাদ যেমন ব্যাটিং করেছে তা হয়ত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকেই অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। বেঙ্গালুরুর বোলারদের কোনোপ্রকার পাত্তা না দিয়ে ২৮৭ রানের পাহাড়সম এক স্কোর দাঁড় করায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। যেকোনো পর্যায়ের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। এরচেয়ে বেশি রান করেছে কেবল নেপাল, মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে।
পুরো ম্যাচে মোট ৪১টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছে হায়দরাবাদের ব্যাটাররা। আইপিএলে এরচেয়ে বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোর ঘটনা ঘটেছে কেবল একবারই। ২০১৩ সালের সেই ম্যাচে ব্যাট করেছিল বেঙ্গালুরুই। পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে সেই ম্যাচে তারা হাঁকিয়েছিল ৪২ বাউন্ডারি। যার মধ্যে ৩০টিই এসেছিল ক্রিস গেইলের ব্যাট থেকে।
বেঙ্গালুরুতে স্বাগতিক বোলারদের ওপর ট্রাভিস হেড-হেনরিখ ক্লাসেনরা ঠিক কতটা চড়াও হয়েছেন, তা পরিষ্কার হয় আরেক পরিসংখ্যানে। গতকাল হায়দরাবাদ ইনিংসে প্রতি দুই বাউন্ডারির মাঝে ব্যবধান ছিল গড়ে ১.৭৬ বল। এতেই বোঝা যায়, হায়দরাবাদ ব্যাটাররা বাউন্ডারি মারার ক্ষেত্রে কতখানি ধারাবাহিক ছিলেন।
চলতি আসরেই একবার সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছিল হায়দরাবাদ। সেবার ২৭৭ করেছিল হেড-ক্লাসেনরা। যে ইনিংসে প্রতি ২.৫০ বলে একটি করে বাউন্ডারি মেরেছিলেন তারা। সেবার অবশ্য ৪টি বাউন্ডারি কম হাঁকিয়েছেন হায়দরাবাদ ব্যাটাররা। আইপিএলের ইতিহাসে এরচেয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দেখা গিয়েছে কেবল একবারই।
গেল আসরে মোহালিতে পাঞ্জাবের বিপক্ষে ২৫৭ রান করেছিল লখনৌ সুপার জায়ান্টস। সেবার প্রতি ১.৫৬ বলে একটি করে বাউন্ডারি মেরেছিল লখনৌ। তবে তাদের ইনিংসে চারের সংখ্যাই ছিল বেশি। গতকাল ছক্কা মারার দিক থেকেও রেকর্ড গড়েছে হায়দরাবাদ।
চিন্নাস্বামীতে সোমবার ২২টি ছক্কা মেরেছে হায়দরাবাদ। প্রতি ছক্কায় বলের ব্যবধান ছিল গড়ে ৩.৮০। আইপিএলের ইতিহাসে এত ধারাবাহিকভাবে ছক্কা হাঁকানোর নজির আর নেই।
স্বাভাবিকভাবেই এই ইনিংসের মাধ্যমে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর নজির গড়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। আইপিএলে এর আগে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছিল ২১ ছক্কা। সেটাও গড়েছিল এই বেঙ্গালোরই। গতকাল সেটিও টপকে যায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
গতকালের এমন ধংসাত্মক ইনিংসের পেছনে বড় কারিগর ছিলেন ট্রাভিস হেড। ৪১ বলে তিনি করেছেন ১০২ রান। আইপিএলের ইতিহাসে চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক হয়েছেন। পাওয়ারপ্লেতে চলতি আসরে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহের তালিকাতেও চলে এসেছেন তিনি। মুম্বাইয়ের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ৫৯ রান। যেটা সর্বোচ্চ। এবার করেছেন ৫২ রান। সেরা তিনে আছে সেটিও।