ঈদুল ফিতরে এবার লম্বা ছুটি মিলেছে নগরবাসীর। ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে ঢাকা ছাড়তে শুরু করেন রাজধানীবাসী। যে কারণে ঈদের দ্বিতীয় দিন শুক্রবারও (১২ এপ্রিল) রাজধানীর সড়কগুলো দেখা গেছে ফাঁকা। হাতেগোনা কয়েকটি বাস চলাচল করছে। তবে সড়কে বেড়েছে রিকশার দাপট। আবার এলাকা বিশেষে লেগুনা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দাপটও দেখা গেছে।
সড়কের চিত্র আগের মতো না হলেও বিনোদন কেন্দ্রগুলোর চিত্র কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিনোদনপ্রেমীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর মিরপুর, পল্লবী, শেরে বাংলা নগর, শ্যামলী, আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, রামপুরা থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত রাস্তা ছিল একদম ফাঁকা। দুপুর ১টার পরেও মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, মৌচাক মোড়, শান্তিনগর, কাকরাইল, মগবাজার, কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় কোনো যানজট নেই, নেই বাসের হেলপারের হাঁকডাক। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও কম। তবে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার আধিক্য বেশি। ভাড়ার সঙ্গে উপরিপাওনা বা বকশিশের আশায় অলিগলি ছাপিয়ে মূল সড়কেও দাপট প্যাডেলচালিত ও ব্যাটারিচালিত রিকশার।
ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়লেও গাড়ির চাপ বাড়েনি সড়কে। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে মার্কেট ও মূলক সড়ক এলাকার বেশিরভাগ দোকানপাটও দেখা যায় বন্ধ। অনেক স্থানে জরুরি প্রয়োজনের ওষুধের দোকানও বন্ধ দেখা গেছে। খোলা আছে অল্প কিছু মুদি দোকান।
আগারগাঁও মোড়ে কথা হয় রিকশা চালক হারুন মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, বাড়তি আয়ের আশায় ঢাকা থেকে গেছি। এবার অনেকদিন ছুটি। ১০/১২ দিন নিশ্চিন্তে সড়কে রিকশা চালাতে পারবো। যতো দৌড়াবো ততো ভাড়া। কারণ, বাস কম। চাইয়া বেশি ভাড়াও নেওয়া যাচ্ছে, কেউ কেউ খুশি হয়ে বকশিশও দিচ্ছে।
শ্যামলীতে ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ডে গিয়ে দেখা যায় ব্যাপক ভিড়। এর সামনে রিকশার আধিক্য। অধিকাংশ বিনোদনপ্রেমী আসছেন রিকশাযোগে, ফিরছেনও রিকশায়। আর ভেতরে ভিড় আরও বেশি।
ওই এলাকার রিকশা চালক আব্দুস সবুর বলেন, এখানে সকাল থেকে অন্তত ১০বার আসলাম। আসতেও ভাড়া যেতেও ভাড়া পাচ্ছি। বকশিশ চাইলেও পাচ্ছি।
তবে মোহাম্মদপুর বাস টার্মিনাল থেকে বছিলা, কেরানীগঞ্জের দিকে যেতে মোড়ে মোড়ে দেখা মেলে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও এলাকাভিত্তিক অটোরিকশার দাপট।
চালক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোহাম্মদপুরের আশপাশের এলাকা এবং বছিলা পার হলেই অন্তত কয়েক ডজন পার্ক-রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে সেসব পার্ক বা রিসোর্টে ছুটছেন রাজধানীর বিনোদনপ্রেমীরা। এক্ষেত্রে ভরসা ওই রিকশা বা অটোরিকশা। কেরানীগঞ্জের স্বপ্নছোঁয়া, মধুমতি মডেল টাউন, গ্রিনভ্যালি, বেলনাসহ বিভিন্ন পার্ক, রিসোর্ট ও ক্যাফে হাউজগুলোতে ছুটছেন তারা।
তানিম হোসেন নামে কল্যাণপুর থেকে আসা এক অভিভাবক বলেন, দুটি রিকশা নিয়ে কেরানিগঞ্জে এসেছি। ঢাকায় তো কখনো রিকশায় ঘোরা হয় না। আজ সড়ক ফাঁকা। দ্রুত পৌঁছে গেছি তিন সন্তান স্ত্রীসহ। ভাড়া হিসেব করলে অটোরিকশার মতো পড়লেও ফাঁকা সড়কের মজাটা ভিন্ন।
বিভিন্ন মোড়ে লোকাল বাস আর সিএনজিচালিত অটোরিকশার দাপট দেখা গেছে। বিশেষ করে রাস্তায় অটোরিকশা ছিল বেশি। ফাঁকা ঢাকায় অটোরিকশা চালকরা বাড়তি ভাড়া হাঁকাচ্ছেন বলে অভিযোগ অনেক যাত্রীর।
আগারগাঁও থেকে চিড়িয়াখানা যেতে ৪০০ টাকা ভাড়া হাঁকানোর অভিযোগ তুলে তুহিনুল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, ভাড়া সর্বোচ্চ ২০০/২৫০ টাকা। সেখানে ৪০০ ছাড়া যাবে না। বাধ্য হয়ে সামনে এগিয়ে রিকশায় উঠছি দুই সন্তান নিয়ে।